আমেরিকার নাকের ডগাতেই ছিল মোল্লা ওমর! প্রকাশ্যে সিআইএ-র ব্যর্থতা

 মোল্লা মহম্মদ ওমর বা মোল্লা ওমর। নয়ের দশকে বিশ্বজুড়ে ত্রাসের আরেক নাম। আল কায়দা প্রধান লাদেনকে আশ্রয় দেওয়া থেকে শুরু করে নয় এগারোর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার হামলা। ক্রমেই পৃথিবীব্যাপী জেহাদের মুখ হয়ে উঠেছিল তালিবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমর। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার পর তাকে খোঁজার জন্য হন্যে হয়ে উঠেছিল আমেরিকা। কিন্তু আমৃত্যু মার্কিন ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায় এই জঙ্গি নেতা। সে নাকি অদৃশ্য। স্বয়ং তালিবানের শীর্ষ নেতারাই নাকি জানত না কোথায় তার ডেরা। তাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে বহু মিথ। ওমরের খোঁজে পাহাড়ি আফগানিস্তানের খানাখন্দও চষে ফেলেছিল মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ। কিন্তু ওই জঙ্গিনেতা নাকি প্রায় পাঁচ বছর আমেরিকার নাকের ডগাতেই ছিল। সদ্য প্রকাশিত এক বইতে এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করা হয়েছে।

আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাঘাঁটির ঢিলছোঁড়া দূরত্বেই নাকি লুকিয়ে ছিল মোল্লা ওমর। আর পাঁচটা ঘরের মধ্যেই ছিল তার গুপ্ত ঠিকানা। তবে সাধারণ কাবুলি বাড়ির মতো দেখতে হলেও সেই ঘরেই অন্দরে ছিল একটি গুপ্তকক্ষ। একাধিকবার সেই ঘরে হানা দিয়েও ওই গুপ্তকক্ষ আবিষ্কার করতে পারেনি ইউএস মেরিনরা। স্বলিখিত একটি বইয়ে এমনটাই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন ডাচ সাংবাদিক বেটে ড্যাম। ২০০৬ সাল থেকেই আফগানিস্তানে কর্মরত তিনি। প্রায় পাঁচ বছর ধরে বিস্তর গবেষণার পর গতমাসে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর বই 'সার্চিং ফর অ্যান এনিমি'। বইটিতে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলি বিশেষ করে সিআইএ-এর ব্যর্থতা তুলে ধরেছেন ওই ডাচ সাংবাদিক। বইটিতে মোল্লা ওমরের দেহরক্ষী জব্বার ওমারির কথা তুলে ধরেছেন ড্যাম। ২০০১-এর পর থেকে ওমরের সঙ্গে ছায়ার মতো থাকত জব্বার। দেহরক্ষীর গাড়ি চালকের বাড়িতেই নকি আত্মগোপন করে ছিল মোল্লা। তালিবান নেতার লুকোনোর জন্য ওই বাড়িতে বিশেষ কায়দায় একটি গুপ্তকক্ষ বানানো হয়েছিল। বাইরে থেকে দেখলে বোঝার উপায় নেই। অথচ ছাদে একটি লুকোনো দরজা দিয়ে সেই কক্ষে প্রবেশ করত ওমর। অন্তত দু'বার ওই বাড়তে তল্লাশি চালায় মার্কিন সেনা। তবে কোনওবারই ওই গুপ্তকক্ষটি খুঁজে পাননি তাঁরা। ২০১৩ সালে দূরারোগ্য ব্যধিতে ভুগে মৃত্যু পর্যন্ত অধরাই থেকে যায় একদা বিশ্বত্রাস মোল্লা ওমর।                        
উল্লেখ্য, বহুদিন ওমরের মৃত্যুর কথা গোপন করে রাখে তালিবান জঙ্গি গোষ্ঠী। অবশেষে ২০১৫ সালে তা প্রকাশ্যে আসে। তারপরও সংগঠনটির রাশ ধরে মোল্লা আখতার মনসুর৷ এনিয়েই জঙ্গিগোষ্ঠীটির অন্দরে বিবাদের সূত্রপাত হয়৷ ক্রমশ তা রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে গড়ায়৷ তবে তালিবানের অন্দরে চলা লড়াইকে একটি মোক্ষম সুযোগ হিসেবে দেখছে আফগান নিরাপত্তা সংস্থাগুলি৷ মার্কিন ও আফগান সেনার হামলায় কোণঠাসা হলেও ফের পাকিস্তান সীমান্তে শক্তিবৃদ্ধি করে ফের হামলা চালাচ্ছে তালিবান৷