মায়া-অখিলেশদের ছাড়, উত্তরপ্রদেশে সাতটি আসনে প্রার্থী দেবে না কংগ্রেস


বেসরকারি বিমানে 'জরুরি দরজা'র পাশের আসনে বসে সাধারণের মতোই লখনউ গেলেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা।


বেসরকারি বিমানে 'জরুরি দরজা'র পাশের আসনে বসে সাধারণের মতোই লখনউ গেলেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। কথা বললেন অন্য সহযাত্রীদের সঙ্গে। নিজস্বীর আবদারও পূরণ করলেন অনেকের। আর লখনউয়ে পা রেখেই দলকে ঘোষণা করতে বললেন, মায়াবতী-অখিলেশদের ছাড় দিতে সাতটি আসনে প্রার্থী দেবে না কংগ্রেস।

আগামী কাল থেকেই প্রয়াগরাজ থেকে নরেন্দ্র মোদীর বারাণসী পর্যন্ত গঙ্গাবক্ষে প্রচার শুরুর কথা প্রিয়ঙ্কার। তার আগে আজ লখনউয়ে নেমেই রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি রাজ বব্বরকে দিয়ে প্রিয়ঙ্কা ঘোষণা করালেন, মায়াবতী, মুলায়ম সিংহ যাদব, অখিলেশ যাদব, তাঁর স্ত্রী ডিম্পল, অজিত সিংহ ও জয়ন্ত চৌধরী যে যে আসনে প্রার্থী হবেন, সেখানে প্রার্থী দেবে না কংগ্রেস। মুলায়ম মইনপুরী, তাঁর ভাইপো অক্ষয় যাদব ফিরোজাবাদ থেকে লড়বেন। আজমগড় বা অন্য আসন থেকে যদি অখিলেশ লড়েন, সে ক্ষেত্রে সেখানেও প্রার্থী দেবে না কংগ্রেস। 

একই সঙ্গে রাজ বব্বরের ঘোষণা, জন অধিকার পার্টির সঙ্গেও সাতটি আসনে জোট হচ্ছে কংগ্রেসের। তার মধ্যে পাঁচটিতে লড়বে ওই দল, আর দু'টিতে কংগ্রেস। মহান দলের সঙ্গে আগেই জোট ঘোষণা করেছেন প্রিয়ঙ্কা। সে দলের নেতারা লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের প্রতীকেই লড়তে চান। প্রিয়ঙ্কার সফরের আগেই শিবপাল যাদব বলে রেখেছিলেন, এক মাস ধরে কংগ্রেসের জন্য অপেক্ষা করছেন তিনি। যদিও আজও কোনও ফয়সালা হয়নি। রাতেই প্রিয়ঙ্কা লখনউয়ে কংগ্রেসের সদর দফতর 'নেহরু ভবন' থেকে প্রয়াগরাজের উদ্দেশে রওনা দেন। পথে মায়ের কেন্দ্র রায়বরেলীও ছুঁয়ে যান।

তবে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পর্রীকরের মৃত্যুতে কেন্দ্র রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণার পরে প্রিয়ঙ্কার গঙ্গাবক্ষে প্রচার হবে কি না, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। টুইটে পর্রীকরের মৃত্যুতে প্রিয়ঙ্কা শোকপ্রকাশ করায় এই প্রশ্ন আরও জোরদার হয়েছে। এর আগে পুলওয়ামায় জঙ্গি হানায় নিহত জওয়ানদের শ্রদ্ধায় নীরবতা পালন করে নিজের প্রথম সাংবাদিক বৈঠকটি বাতিল করে দিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা। 
কংগ্রেসের এক নেতার মতে, মায়াবতী ও অখিলেশের উপরে অনেক দিন ধরেই চাপ দেওয়া হচ্ছিল সমঝোতার জন্য। কিন্তু মায়াবতী অনড় থেকেছেন।

মায়াবতী এখনও লড়বেন কি না, স্পষ্ট নয়। কিন্তু রাহুলের সঙ্গে কথা বলে প্রিয়ঙ্কা আজ ইতিবাচক বার্তা দিলেন মায়া-অখিলেশকে। ঠিক যে ভাবে তাঁরা অমেঠী ও রায়বরেলী আসন কংগ্রেসের জন্য ছেড়ে রেখেছেন।

দলের নেতাটির মতে, ''এটা ঠিক, রাহুলের সঙ্গে রোড-শোয়ের পর উত্তরপ্রদেশে ফেরতে অনেকটা সময় নিয়েছেন প্রিয়ঙ্কা। কিন্তু এক বার ঝড় উঠলে পরিস্থিতি বদলে যাবে।'' তবে অনেকেই 
মনে করেন, কংগ্রেস খুব বেশি আক্রমণাত্মক হলে ত্রিমুখী লড়াইয়ে লাভ হবে বিজেপিরই।

আজ সকালে লখনউ যাওয়ার আগেই প্রিয়ঙ্কা উত্তরপ্রদেশের কর্মীদের জন্য একটি খোলা চিঠি লেখেন। সেখানেও তাঁর নিজের ছন্দে সম্বোধন করেন, ''আমাদের প্রিয় বোন ও ভাইরা!'' প্রিয়ঙ্কা জানান, কী ভাবে তিনি উত্তরপ্রদেশের মাটিতে কাজ করতে চান। সঙ্গে এ-ও জানিয়েছেন, জলপথে এই প্রচার ছাড়া এ বারের সফরে বাসে, ট্রেনে, পদযাত্রা করেও জনসম্পর্ক অভিযান করবেন তিনি। আপাতত গোটা উত্তরপ্রদেশ ঘুরে মানুষের কথা শুনতে চান তিনি।