অবাধ, স্বচ্ছ নির্বাচনের লক্ষ্যে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ কমিশনের


পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচনী প্রক্রিয়া। সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করতে তাই এবার বেশ কিছু বাড়তি পদক্ষেপ নিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। রবিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা সেসব ব্যবস্থার কথাই জানালেন। এবার মোট ভোটার সংখ্যা ৯০ কোটি। এর মধ্যে একেবারে নতুন ভোটারের সংখ্যা কমবেশি দেড় কোটি। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের অধিকার প্রদান সুনিশ্চিত করতে ইভিএমের সঙ্গে ভিভিপ্যাট সংযুক্ত রাখতে হবে। ১০০ শতাংশ বুথেই এই ব্যবস্থা চায় নির্বাচন কমিশন।

মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সুনীল অরোরা জানিয়েছেন, 'দেশের ১০ লক্ষ ভোটবুথের ইভিএমে প্রার্থীদের নাম, ছবি, প্রতীক থাকবে। প্রতিটি ভোটযন্ত্রে থাকবে ভিভিপ্যাট। এর জন্য ১৭.৪ লক্ষ ইভিএম লাগবে। ভোটারদের ভিভিপ্যাটের ব্যবহার বোঝাতে হবে। ভোটদান প্রক্রিয়া আরও সহজ করার লক্ষ্যে কাজ করবে নির্বাচন কমিশন। যে কোনও প্রয়োজনে কমিশনের টোল ফ্রি নম্বরে যোগাযোগ করা যেতে পারে। টোল ফ্রি নম্বর – ১৯৫০।' ইভিএম নিয়ে কোনওরকম কারচুপির চেষ্টা হলে, তা জিপিএস ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে ধরা পড়বে। তাতে নির্বাচনে অস্বচ্ছতা এড়ানো যাবে। কমিশনার আরও জানিয়েছেন, কোনওরকম নিয়ম ভাঙলে সঙ্গে সঙ্গে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের ক্ষেত্রে এবার বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটে কড়া নজরদারি চলবে কমিশনের তরফে। বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন ভোটারদের জন্য ব্যবস্থা থাকবে ভোটকেন্দ্রে। থাকবে হুইলচেয়ার এবং তাঁদের সাহায্যের জন্য কর্মীরা। ভোটপর্ব চলাকালীন বিভিন্ন স্তরে পর্যবেক্ষকের সংখ্যা এবার পর্যাপ্ত রাখা হচ্ছে। কোথাও কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা দেখলে, তা সঙ্গে সঙ্গে ভিডিও করে কমিশনকে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ভোটের আগে স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে চলবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুট মার্চ, এরিয়া ডমিনেশন। ১১ এপ্রিল থেকে ১৯ মে, দেশজুড়ে ৭ দফা ভোটগ্রহণের মাঝেই পড়ছে সিবিএসই পরীক্ষা এবং ইদ। নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণা এই বিষয়গুলিকেও বিবেচনা করা হয়েছে বলে জানালেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা। প্রতিটি রাজ্যের মুখ্যসচিব, ডিজি এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে, রাজ্যের পরিস্থিতি জেনেবুঝে তবেই দিনক্ষণ ঠিক করা হয়েছে বলে দাবি নির্বাচন কমিশনের। রবিবার ভোটের সূচি ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই লাগু হয়ে গেল আদর্শ নির্বাচনী আচরণ বিধি। কমিশনের বেঁধে দেওয়া নিয়মকানুন মেনে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটপর্ব মিটে নতুন লোকসভা তৈরির অপেক্ষায় দেশবাসী।