ফের বদলাচ্ছে মাধ্যমিকের সিলেবাস, ২০২২ থেকে নতুন পাঠক্রমে পরীক্ষা


দেশজুড়ে দিল্লি বোর্ডের দাপট। ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের একটি অংশ তা পছন্দও করছেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তা আটকাতে চায়। মাধ্যমিক স্তরে আরও সমোয়পযোগী সিলেবাস চালু হচ্ছে। ২০২০ থেকে নবম শ্রেণির সিলেবাস বদলাবে। পরের বছর দশম শ্রেণির। ২০২২ সাল থেকে নতুন সিলেবাসে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে লক্ষ লক্ষ পড়ুয়া।

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশ পেয়ে এই বিষয়ে কাজ শুরু করেছে স্কুলশিক্ষা বিশেষজ্ঞ কমিটি। কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার জানিয়েছেন, "স্কুলস্তরে প্রত্যেকটি ক্লাসে সিলেবাস ইতিমধ্যে সংষ্কার করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে আরও সংষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে।" পার্থবাবু এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, "ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে মাধ্যমিকের সিলেবাস রিভিউ করার কথা বলেছি। সিলেবাস কমিটি এই কাজ করবে।" প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে নতুন সিলেবাসে মাধ্যমিক হয়েছে। ফের সেই সিলেবাসে বদল করার কাজ শুরু হয়েছে।

বাস্তব ছবি বলছে, সিবিএসই বা আইসিএসই-এর মতো বোর্ডগুলির জনপ্রিয়তা ক্রমশ বাড়ছে। মাধ্যমিকে কমছে পড়ুয়ার সংখ্যা। বিক্ষিপ্তভাবে কিছু স্কুল বোর্ড বদলের ইচ্ছার কথা জানিয়েছে স্কুলশিক্ষা দপ্তরকে। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করেছেন দপ্তরের আধিকারিকরা। শিক্ষাবিদদেরও পরামর্শ নেওয়া হয়। প্রস্তাব আসে, আরও সমোয়পযোগী করতে হবে সিলেবাস। সেই অনুযায়ী নয়া সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যে ক্লাসে বয়ঃসন্ধির সমস্যা ও প্রতিকারের কথা বলা হচ্ছে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শিবির আগের তুলনায় আরও বাড়ানো হয়েছে। নিয়মনীতি, শৃঙ্খলা, সময়ানুবর্তিতার পাঠ দেওয়ার পাশাপাশি বন্ধুর মতো পড়ুয়াদের সঙ্গে মেশার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। উচ্চমাধ্যমিক স্তরে কৈশোরের আট রকমের চাহিদার কথা শেখাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সক্রিয়তা, স্বাধীনতা, সামাজিক, নতুন জ্ঞান, নীতিবোধ, জীবনাদর্শ গড়া, আত্মনির্ভরতার কথা বলা হচ্ছে ক্লাসে।

বিশেষজ্ঞ কমিটি জানিয়েছে, সচেতন নাগরিক হিসাবে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের বড় করতে এই চেষ্টা। কোনটা ভাল এবং কোনটা খারাপ সেই নৈতিক বোধ যেন ছাত্রছাত্রীদের তৈরি হয়। পথ নিরাপত্তা, বিপর্যয় মোকাবিলা, সুখাদ্য এবং অখাদ্য চিহ্নিতকরণ, প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো, দূষণ কমানো, উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে লড়াই করা, কন্যাশ্রী, প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট করছে এমন বর্জ্য, ভূমিকম্প বা ঝড় এলে কী করণীয় এসব নতুন করে স্কুল পাঠ্যে রাখা হয়েছে।