প্রাক বিবাহ যৌনতা, পরকীয়াতেই এইডস! শিক্ষা দিচ্ছে পাঠ্যবই


এদেশে এইডস নিয়ে ছুঁতমার্গের শেষ নেই। সচেতনতামূলক প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে নানা ধরণের অপপ্রচারও চলে। বিভ্রান্ত হন অনেকেই। এমনকী, স্রেফ কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে এইডস রোগীকে একঘরে করে দেওয়ার ঘটনা আজকের সময়েও বিরল নয়। এমনই যখন পরিস্থিতি, ঠিক তখনই স্কুলের পাঠ্যবইয়ে এই মারণরোগ সম্পর্কে যে তথ্য ছাপা হল, তা দেখে আঁতকে উঠছেন সচেতন মানুষজনই। বইতে লেখা, বিয়ের আগে যৌন সম্পর্ক তৈরি করা ও পরকীয়ায় লিপ্ত হওয়াই নাকি এইডস সংক্রমণের মূল কারণ! শিক্ষকদের নজরে আসার পর অবশ্য তড়িঘড়ি এই তথ্য সংশোধন করে নেওয়া হয়েছে বলেও খবর।

সাধারণ মানুষই হোন কিংবা সেলিব্রিটি, ক্যানসারের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না কেউই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু-র সমীক্ষা বলছে, ২০২০ সালে মধ্যে ভারতে ক্যানসার মহামারীর আকার নেবে। এইডসের বিপদও কম নয়। আশার কথা একটাই, যৌন জীবনের একটু সতর্কতা অবলম্বন করলেই এইডসের মতো মারণরোগের সংক্রমণ রুখে দেওয়া সম্ভব। চিকিৎসকদের মতে, যাঁরা ন্যূনতম সুরক্ষা ছাড়াই যৌন জীবন যাপন করেন কিংবা যাঁদের একাধিক যৌন সঙ্গী বা সঙ্গিনী থাকে, তাঁদেরই এইডসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। তাই সমাজে একটি ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত আছে যে, এইডসে আক্রান্ত হওয়া মানেই রোগীর চারিত্রিক ত্রুটি আছে। এটা এতটাই বিভ্রান্তিকর যে স্রেফ লোকলজ্জার ভয়ে অনেকেই রোগের কথা গোপনও করে যান। ফলে যথাযথ চিকিৎসাও হয় না।

২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে দশম শ্রেণির জীবনবিজ্ঞানের পাঠ্যবই পরিমার্জন করেছে কেরল সরকার। দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচিতে স্থান পেয়েছে এইডস-সহ বিভিন্ন রোগ সংক্রান্ত নানা তথ্য। কিন্তু তাতে সচেতনতা প্রসার কতটা হল, তা বলা যাচ্ছে না। উলটে কৈশোর থেকে পড়ুয়ার মনে এই মারণ রোগ সম্পর্কে ভুল ধারণা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। কারণ জীবনবিজ্ঞানের বইতেই লেখা, বিয়ের আগে যৌনতা ও পরকীয়ার লিপ্ত হলে নাকি এইডস ছড়াতে পারে। এখানেই শেষ নয়, রীতিমতো রেখাচিত্রের মাধ্যমে বিষয়টি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, স্কুলপাঠ্য বইয়ে এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রথম নজরে পড়ে শিক্ষকদেরই। ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট করেন তাঁরা। ছবিটি ভাইরাল হতে সময় লাগেনি। এরপরই নড়েচড়ে বসে স্টেট কাউন্সিল অব এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড বা সিএসইআরটি কর্তৃপক্ষ। সংস্থার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, 'দশম শ্রেণির জীবনবিজ্ঞান পাঠ্যবইয়ে ভুলটি আমাদের নজরে এসেছে। সংশোধনও করা হয়েছে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে সিলেবাস ফের বদল করে দেওয়া হবে। ওই সংক্রান্ত বিভ্রান্তিকর তথ্য আর থাকবে না।'