অর্জুন: তৃণমূলের টোটকা


অর্জুন সিংকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করল তৃণমূল। তাঁর বিরুদ্ধে দলত্যাগ আইন প্রয়োগের জন্য বিধানসভার স্পিকারের কাছে চিঠি দিচ্ছেন দলের মহাসচিব পার্থ চ্যাটার্জি। ভাটপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিং বৃহস্পতিবার দিল্লিতে বিজেপি–তে যোগ দিয়েছেন। এবার তৃণমূল টোটকার বয়বস্থা করছে। শুক্রবারই তৃণমূল ভবনে অর্জুন সিংয়ের ঘনিষ্ঠ অনুগামীরা তৃণমূলে যোগ দেন। বিজেপি–র প্রমোদ সিং, ধরমপাল গুপ্তা, কংগ্রেসের সোমনাথ শ্যাম, সঞ্জয় সিং ও জিতেন্দ্র সাউ— ভাটপাড়ার এই ৫ জনের হাতে পার্থ চ্যটার্জি দলের পতাকা তুলে দেন। এদিন সকালে মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও মন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লা এঁদের কয়েকজনকে নিয়ে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বাড়িতে যান। ফিরহাদ মমতার সঙ্গে দেখা করেন। তাঁকে বলেন, '‌এঁরা তৃণমূলে আসতে চাইছেন।'‌ মমতা অনুমতি দেওয়ার পর তৃণমূল ভবনে এঁদের আনা হয়। উপস্থিত ছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও নির্মল ঘোষ। ছিলেন ব্যারাকপুরের তৃণমূল প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদী।
‌জিতেন্দ্র ওরফে জিতু ২০১৫-র পুরসভা ভোটে নিজের ওয়ার্ডে অর্জুনের লোকজনকে ঢুকতে দেননি। এলাকায় প্রভাব যথেষ্ট। ১৬ সালে বিধানসভা ভোটে তাঁকে প্রার্থী করেনি আলিমুদ্দিন। লোকলস্কর নিয়ে সিপিএম রাজ্য দপ্তরে বিক্ষোভও দেখিয়েছিল জিতু–‌বাহিনী। শেষ পর্যন্ত বাম-কংগ্রেস জোট সমর্থিত নির্দল প্রার্থী হয়ে কাপ–‌প্লেট চিহ্ন নিয়ে লড়াই করেন তিনি। জিততে পারেননি।  
উত্তর ২৪ পরগনা তৃণমূলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ভাটপাড়ার তৃণমূলের সব কমিটি ভেঙে দিয়েছেন। একটি নির্বাচন কমিটি করে দিয়েছেন। চেয়ারম্যান হয়েছেন ধরমপাল গুপ্তা, ভাইস চেয়ারম্যান নাসির খান ও প্রমোদ সিং। যুগ্ম আহ্বায়ক জিতেন্দ্র সাউ, সোমনাথ শ্যাম। এ ছাড়া এই কমিটিতে আরও ১১ জন থাকবেন। এদিন তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে জেলার সাংগঠনিক বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করেন। জ্যোতিপ্রিয় এদিনও বলেন, '‌অর্জুন চলে যাওয়ায় দলের কোনও ক্ষতি হবে না। উত্তর ২৪ পরগনার ৫টি লোকসভা আসনে তৃণমূল বিপুল ভোটে জয়ী হবে।'‌
এদিন পার্থবাবু বলেন, '‌উত্তর ২৪ পরগনায় বিজেপি প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না।'‌ দিলীপ ঘোষকে কটাক্ষ করে পার্থ বলেন, '‌২০২১–এর পর নিজেদের বাড়ি ঠিক থাকবে তো?‌ নিজের দলের কিছু নেই। যাঁরা ব্যক্তিস্বার্থে বিশ্বাসী, ভোগবাদে বিশ্বাসী, তাঁদের আরও প্রলোভন দেখিয়ে বিজেপি–তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যাঁরা মমতার সততা ও আদর্শ নিয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে দল করেন, তাঁরা কেউ যাবেন না।'‌ পার্থ এদিন সরাসরি জানিয়ে দেন, '‌ কয়েকজন চলে যাওয়ার জন্যেই তৃণমূলে এসেছিলেন। চলে গেছেন। ভাটপাড়ার অনেকেই দীনেশদাকে বলেছেন, আমরা আপনার পাশে আছি। অর্জুনকে কটাক্ষ করে পার্থ বলেন, '‌মমতার ছবি নিয়ে যিনি নেতা হলেন, তিনি পেছন থেকে ছুরি মারলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে জনবিক্ষোভ হচ্ছে। এতে দল মজবুত হবে। সকলে ঐক্যবদ্ধ হবে। কাঁচরাপাড়ায় লাইটপোস্টের নীচে দাঁড়িয়ে বিজেপি প্রার্থী খু্ঁজছে! টিভি চ্যানেলে যাঁদের মুখ দেখানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ চেনে না। সারা বছর কাজ করেননি। এবার তাঁরা বুঝবেন ঠ্যালা। সকলে বলছেন, দীনেশদা নতুন জীবন ফিরে পেলেন।'‌‌