চাকরির দাবিতে আন্দোলনরত এসএসসি প্রার্থীদের সঙ্গে দেখা করলেন শিক্ষামন্ত্রী


চাকরিতে স্থায়ীকরণের দাবিতে অনশনরত প্রার্থীদের সঙ্গে দেখা করে আশ্বাস দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শনিবার সন্ধেবেলা মেয়ো রোড, যেখানে বৃহস্পতিবার থেকে অনশন করছেন এসএসসি প্রার্থীরা, সেখানে গিয়ে দেখা করেন তিনি। তাঁকে সামনে পেয়ে প্রার্থীরা রীতিমতো পায়ে পড়ে নিজেদের অসহায়তার কথা জানাতে থাকেন। তাঁদের কথা শুনে শিক্ষামন্ত্রী মঙ্গলবার তাঁদের দেখা করতে বলেন। সেইসঙ্গে অনশন প্রত্যাহার করার আবেদনও জানিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

২০১৬ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা থেকে জটের সূত্রপাত। একাধিক দাবি তুলে হাই কোর্টে মামলা করেন পরীক্ষার্থীদের একাংশ। যার জেরে আটকে যায় ফলপ্রকাশ। ২০১৮ সালেও তা প্রকাশিত হয়নি। তবে তার মধ্যেই পুরনো প্যানেল থেকে ১ লক্ষ ২৮ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরে। তা সত্ত্বেও অনেকের চাকরি স্থায়ী হয়নি। কেউ চাকরির নিয়োগপত্র পেলেও, চাকরির জায়গা ঠিক হয়নি। ফলে তাঁরা চরম অনিশ্চয়তায়। এঁরাই চাকরির নিশ্চয়তার দাবি তুলে বৃহস্পতিবার থেকে মেয়ো রোডে অনশনে বসেছেন। শনিবার সকালে অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁদের মধ্যে কয়েকজন। সন্ধেবেলা সেখানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে সামনে পেয়ে কয়েকজন নিজেদের অভিযোগ জানাতে থাকেন। এরপর শিক্ষামন্ত্রীর পায়ের কাছে বসে হাত জোড় করে আবেদন জানান। তাঁরা বলেন, 'আপনি একবার চাকরি নিশ্চিত করুন। আমরা সে কথার উপর ভিত্তি করে এখনই চলে যাব। শুধু একবার বলে দিন, আমরা চাকরি পেয়ে যাব।' এসব শুনে শিক্ষামন্ত্রী তাঁদের আশ্বস্ত করে বলেন, 'আপনারা মঙ্গলবার সব তথ্য নিয়ে আমার সঙ্গে দেখা করুন। এসএসসি-র ভিত্তিতে নিয়োগ শিক্ষাদপ্তর করে না। করে কমিশন। ওইদিন কমিশনের কর্তাদের ডেকে পাঠিয়ে আমি দু পক্ষের সঙ্গেই কথা বলব।' সেইসঙ্গে তিনি অনশন প্রত্যাহার করতেও বলেন।

এরপর শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, 'আমরা মেধা এবং স্বচ্ছতার ভিত্তিতেই শিক্ষক নিয়োগ করেছি। নিয়ম মেনে নবম, দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে শিক্ষক নিয়োগ করা যাচ্ছে না। যথেষ্ট সহানুভূতিশীলতার সঙ্গেই সব দিক বিবেচনা করা হয়েছে। বিরোধীরা আদালতে গিয়ে ২০১৬'র পরীক্ষা নিয়ে জটিলতা তৈরি করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীকেও পরিস্থিতির কথা জানিয়েছি। নিয়োগ নিয়ে কোনও সমস্যা থাকলে, আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব। যাদের যোগ্যতা আছে, তারা চাকরি পাবেন।' শিক্ষামন্ত্রীর এই আশ্বাসের পর অনশনকারীরা কোন পদক্ষেপ নেন, সেটাই এখন দেখার।