চাকরি না পেয়ে আত্মঘাতীদের স্মরণ করে অনশন জারি এসএসসি প্রার্থীদের


এখনই অনশন তোলা হবে না৷ গত ১৬ দিন যেভাবে অনশন চলেছে আগেও তেমনই চলবে৷ ১৭তম দিনে ফের গর্জে উঠলেন অনশনে অংশ নেওয়া প্রতিবাদী চাকরিপ্রার্থীরা৷

২০১২ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) পরীক্ষা দিয়েছিলেন অতনু মিস্ত্রি ও মকসেদুল হক৷ তারপর কেটে গিয়েছে অনেকগুলো বছর৷ কিন্তু চাকরি জোটেনি৷ হতাশায় আত্মহননের পথই বেছে নিয়েছিলেন তাঁরা৷ তাঁদের স্মরণ করেই শনিবার চাকরিপ্রার্থীরা জানিয়ে দিলেন, যতদিন না স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু হবে, ততদিন এভাবেই অনশন চলবে৷ এদিন কলকাতার প্রেস ক্লাবের সামনে মোমবাতি মিছিলে মৃতদের স্মরণ করে অনশন জারি রাখেন তাঁরা৷ তাঁদের সঙ্গে এদিন দেখা করতে আসেন অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র৷ অনশনরতদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি৷ তাঁর মতে, ন্যায্য দাবিতেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা৷ এই আন্দোলনে তাঁদের পাশে আছেন অধ্যাপক৷

এদিকে তৃতীয় কাউন্সেলিংয়ের দিনক্ষণ ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। নবম ও দশম শ্রেণির প্রার্থীদের জন্য ২৬ মার্চ থেকে ১ এপ্রিল পর্যন্ত কাউন্সেলিং চলবে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষকতা করার জন্য যাঁরা আবেদন করে পরীক্ষায় পাশ করেছেন তাঁদের কাউন্সেলিং হবে ১৯ এবং ২০ মার্চ। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, স্বচ্ছতা বজায় রেখেই শিক্ষক নিয়োগ হবে৷ কিন্তু অনশনকারীদের দাবি, কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ হলেও তাতে ন্যায্য ব্যক্তি চাকরি পাবেন না৷ কারণ এর আগে পরীক্ষার্থীর নামের পাশে নম্বরের কোনও উল্লেখ করা হয়নি৷ এদিকে নির্বাচনী বিধি চালু হয়ে যাওয়ায় সরকারের তরফে আর কোনও আশ্বাস দেওয়াও সম্ভব নয়৷

২০১৬ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা থেকে জটের সূত্রপাত। একাধিক দাবি তুলে হাই কোর্টে মামলা করেন পরীক্ষার্থীদের একাংশ। যার জেরে বিলম্বিত হয় ফলপ্রকাশ। তবে, তার মধ্যেই পুরনো প্যানেল থেকে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে৷ প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তরে সেই পরীক্ষার উপর ভিত্তি করেই নিয়োগ চলছে। অনেকে চাকরির নিয়োগপত্র পেলেও, পোস্টিং হয়নি। যাঁরা পরীক্ষায় পাশ করেছেন তাঁদের একটি অংশ চাকরির নিশ্চয়তার দাবি তুলে একটানা অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন৷ আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন অন্তঃসত্ত্বাও৷ তাঁদেরকে অনেক বুঝিয়ে বাড়ি ফেরানো হলেও এক গর্ভবতী মহিলা অনশন চালিয়ে যান৷ পরে তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করা হলে জানা যায়, তাঁর ভ্রুণটি নষ্ট হয়ে গিয়েছে৷ ইতিমধ্যেই অনশনে অংশ নেওয়া ৫৬ জন চাকরিপ্রার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন৷ পানীয় জলের অভাব, শৌচাগারের অব্যবস্থার মধ্যেও নিজেদের দাবিতে অনড় তাঁরা৷ কাউন্সেলিংয়ের তারিখ ঘোষণার পরও অনশন না ওঠায় চিন্তায় রাজ্য সরকার।