বোমা ফেলা বালাকোটের সেই জঙ্গি ঘাঁটিতে সাংবাদিকদের ‘প্রবেশ নিষিদ্ধ’ করল পাকিস্তান


বাইরে থেকে তোলা বালাকোটের সেই জঙ্গি ঘাঁটি। 

বালাকোটে ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযানে কত জনের মৃত্যু হয়েছে, তা নিয়ে তরজা অব্যাহত। সেই বিতর্কের মধ্যেই বালাকোটের সেই জইশ জঙ্গি ঘাঁটিতে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দিল পাক প্রশাসন। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহকদের এই নিয়ে তিন বার আটকাল জঙ্গিরা। ফলে প্রকৃতপক্ষে জঙ্গি ঘাঁটিতে ঠিক কতজনের মৃত্যু হয়েছে, কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বা আদৌ কোনও ক্ষতি হয়েছে কি না, তা নিয়ে অদূর ভবিষ্যতে ধোঁয়াশা কাটার আশা নেই বললেই চলে। তবে রয়টার্সের দাবি, বালাকোটের যে ঘাঁটিতে ভারতীয় বায়ু সেনা বোমা ফেলেছিল, বাইরে থেকে দেখে তাতে তেমন কিছু ক্ষতি হয়েছে বলে মনে হয়নি।
গত ২৬ জানুয়ারি ভোর রাতে পাকিস্তানে ঢুকে বালাকোটে একটি জঙ্গি শিবিরে ঢুকে মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমানে ১০০০ কেজি বোমা ফেলে আসে ভারতীয় বায়ুসেনা। বায়ুসেনা দাবি করেছে, নির্দিষ্ট লক্ষ্যে সফল ভাবেই আঘাত করেছে বোমাগুলি। ভারতের বিদেশ সচিব বিজয় গোখেল বলেন, জইশ-ই-মহম্মদের ঘাঁটিতে হামলায় বড় সংখ্যায় জঙ্গি, প্রশিক্ষক, জঙ্গিদের কমান্ডার এবং ফিদায়েঁ জঙ্গিদের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু অভিযানে কত জনের মৃত্যু হয়েছে, তার সঠিক সংখ্যা জানানো হয়নি।
এই পরিস্থিতিতে সঠিক ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যেত সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা ওই জঙ্গি ক্যাম্পে ঢুকতে পারলে। কিন্তু সেটাও সম্ভব হচ্ছে না পাক প্রশাসনের বাধায়। কারণ ওই জঙ্গি ঘাঁটিকে কার্যত চার দিক থেকেই কড়া প্রহরায় রাখা হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধি বা অপরিচিত কাউকেই ভিতরে ঢুকতে দেওয়া দূর অস্ত, ক্যাম্পের অনেক আগেই আটকে দেওয়া হচ্ছে।

ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযানের পর থেকেই সাংবাদিকরাও নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, ওই ঘাঁটিতে ঢোকার। কিন্তু ইসলামাবাদে মিলিটারি প্রেস উইং-এর পক্ষ থেকে স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়েছে, আগামী কয়েক দিন ওই এলাকায় 'নিরাপত্তার কারণে' বাইরের কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এর আগে দু'বার রয়টার্সের তরফে আনুমোদন চাওয়া হলে নাকচ হয়ে যায়। শুক্রবার ফের রয়টার্সের প্রতিনিধিরা ভিতরে ঢোকার জন্য ওই এলাকায় যান। কিন্তু তাঁদের ক্যাম্পের অনেক আগেই আটকে দেন পাক নিরাপত্তা কর্মীরা। তাঁরাও একই কারণে নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে তাঁদের ভিতরে ঢুকতে দেননি।

তবে রয়টার্সের দাবি, ওই জঙ্গি ঘাঁটির প্রায় ১০০ মিটার দূরে তাঁদের প্রতিনিধিদের আটকে দেওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁদের প্রতিনিধিরা দেখেছেন, ওই ক্যাম্পের ভবনটি অক্ষতই আছে। কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও দূর থেকে দেখে মনে হয়নি। পাশাপাশি গ্রামবাসীদের একজনকে উদ্ধৃত করে রয়টার্সের দাবি, এখন আর সম্ভবত ওই ক্যাম্পে কোনও প্রশিক্ষণ বা অন্য কোনও কাজকর্ম চলছে না।