‘আর ৭৩ সিলেক্টেড’, পাক যুদ্ধবিমানকে ধ্বংস করার আগে এই বার্তাই দিয়েছিলেন অভিনন্দন


মিগ ২১। ইনসেটে অভিনন্দন বর্তমান।

'আর ৭৩ সিলেক্টেড'— পাক যুদ্ধবিমান এফ ১৬-কে ধ্বংস করার আগে উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানের  শেষ রেডিও বার্তা ছিল এটাই। তার পরই এফ ১৬-কে লক্ষ্য করে ভিম্পেল আর-৭৩ এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল দেগেছিলেন তিনি।

সেনার এক সূত্রের খবর, দুটি যুদ্ধবিমানের মধ্যে প্রায় ৮৬ সেকেন্ড ধরে লুকোচুরি খেলা চলে। অভিনন্দনের চোখে ধুলো দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে এফ ১৬ বিমানটি। কিন্তু খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। তার পিছু পিছু মিগ ২১ বাইসন নিয়ে তাড়া করতে থাকেন অভিনন্দন।  সূত্রের খবর, এফ ১৬-কে তাড়া করার সময় অভিনন্দনের মিগ ২১-এর গতি ছিল প্রতি চার সেকেন্ডে এক কিলোমিটার বা প্রতি ঘণ্টায় ৯০০ কিলোমিটার। শুধু তাই নয়, লড়াই করতে করতে অভিনন্দনের মিগ ২১ এবং পাক যুদ্ধবিমানটি একটা সময়  প্রায় ২৬ হাজার ফুট উচ্চতায় পৌঁছে গিয়েছিল। এ ভাবেই  প্রায় ১৫ মিনিট চলে 'ডগ ফাইট'।  

একটা সময় দুটো বিমানের পারস্পরিক দূরত্ব কমে আসে। আর সেই সুযোগটাকেই কাজে লাগিয়েছিলেন অভিনন্দন। শর্ট রেঞ্জের আর-৭৩ মিসাইল ছোড়েন  এফ ১৬-কে লক্ষ্য করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ রকম পরিস্থিতিতে আরভিভি-এই মিডিয়াম রেঞ্জ এয়ার-টু-এয়ার মিসাইলের চেয়ে আর-৭৩ অনেক বেশি কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারে। আর সেটাই করেছিলেন অভিনন্দন।

এক বায়ুসেনা আধিকারিক জানান, বিশ্বে এই প্রথম কোনও মিগ ২১ যুদ্ধবিমান এফ ১৬-এর মতো অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানকে ধ্বংস করল। সূত্রের খবর, এফ ১৬-এর সঙ্গে লড়াই চলাকালীন অন্য একটি পাক যুদ্ধবিমান ৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে অভিনন্দনের বিমান লক্ষ্য করে গুলি চালায়। আর তাতেই অভিনন্দনের বিমানটি ধ্বংস হয়ে যায়। ইজেক্ট করে বেরিয়ে এলেও তিনি পাক অধিকৃত কাশ্মীরে গিয়ে পড়েন। তার পরই পাক সেনার হাতে আটক হন।

বালাকোটে বায়ুসেনা জইশের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়ে আসার পর দিনই নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারতীয় সেনার ক্যাম্পগুলোতে পাল্টা হামলা চালানোর জন্য পাকিস্তান থেকে কয়েকটি এফ ১৬, জেএফ ১৭ এবং মিরাজ ৬ উড়ে এসেছিল। কিন্তু সে চেষ্টা তত্পরতার সঙ্গে ব্যর্থ করে দেয় বায়ুসেনা। পাক যুদ্ধবিমানগুলোকে তাড়ানোর জন্য বিভিন্ন এয়ারবেস থেকে উড়ে আসে সুখোই ৩০ এমকেআই, মিরাজ ২০০০ এবং মিগ ২৯। শ্রীনগর থেকে উড়েছিল ৬টি মিগ ২১ বিমান। তাদের মধ্যে একটিতে ছিলেন অভিনন্দন বর্তমান। বায়ুসেনার এক আধিকারিক জানান, বালাকোটে হামলার পর পাকিস্তান যে পাল্টা হামলা চালানোর চেষ্টা করবে এটা প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি সেটা করবে আশা করা যায়নি। বায়ুসেনাও প্রস্তুত ছিল। তাই তত্পরতার সঙ্গে পাল্টা জবাব দিয়েছে।