ভিক্টোরিয়ায় ড্রোন উড়িয়ে ছবি তোলার চেষ্টা, হাতেনাতে পাকড়াও চিনা যুবক


ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে ধৃত চিনা নাগরিক।

ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল চত্বরে ড্রোন উড়িয়ে ছবি তুলতে গিয়ে হাতে নাতে ধরা পড়লেন এক চিনা নাগরিক।

পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার বিকালে তাঁরা ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী(সিআইএসএফ)-র কাছ থেকে জানতে পারেন ওই চিনা নাগরিক সম্পর্কে।

শনিবার দুপুরে ওই চিনা নাগরিক ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে ঢোকেন। সিআইএসএফ সূত্রে খবর, বেলা একটা নাগাদ জওয়ানরা ভিক্টোরিয়ার আকাশে একটি ড্রোন উড়তে দেখেন। ড্রোন দেখেই তাঁরা সতর্ক হয়ে যান এবং কিছুক্ষণ খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে চত্বরের মধ্যে থেকেই ওই ড্রোন ওড়ানো হচ্ছে। সিআইএসএফ জওয়ানরা হাতেনাতে পাকড়াও করেন চিনা যুবককে। তাঁর সঙ্গে আরও দু'জন চিনা নাগরিক ছিলেন। তাঁদের তিনজনকেই আটক করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে বিকালে হেস্টিংস থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

টানা জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ লি-জেই-ওয়েই নামে ২৬ বছরের চিনা যুবককে গ্রেফতার করেন। তাঁর কাছ থেকেই ওই ড্রোন পাওয়া গিয়েছিল। মোবাইল ফোনের সাহায্যে রিমোট কন্ট্রোলে ওড়ানো হচ্ছিল ওই ড্রোন।

পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত চিনা যুবক এবং তাঁর সঙ্গীরা ইংরেজি খুব ভাল বুঝতে পারেন না। ভাঙা ভাঙা ইংরেজি বলেন। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়েও ভাষা সমস্যার মুখোমুখি হন তদন্তকারীরা। তদন্তকারীদের কাছে এখনও স্পষ্ট নয় কেন ওই যুবক ড্রোন উড়িয়ে ছবি তুলছিলেন। তদন্তকারীদের আশঙ্কা, ভিক্টোরিয়ার খুব কাছেই ফোর্ট উইলিয়ামের সেনা ছাউনি। সেখানকার কোনও ছবি তোলা ওই যুবকের উদ্দেশ্য ছিল কী না তা স্পষ্ট নয়। ধৃত যুবককে ভিসা বিধি ভাঙা এবং এয়ারক্রাফ্ট আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে। কারণ ওই আইন অনুযায়ী, সরকারি অনুমতি ছাড়া সেনা ছাউনি বা নিরাপত্তার দিক থেকে কোনও গুরুত্বপূর্ণ এলাকার তিন কিলোমিটারের মধ্যে কোনও আকাশযান ওড়ানো নিষিদ্ধ।

রবিবার মুখ্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ওই চিনা যুবককে পেশ করা হয়। সরকারি আইনজীবী আদালতকে জানান, ধৃত কী উদ্দেশ্যে ছবি তুলেছিল তা স্পষ্ট নয়। ধৃতকে জেরা করা প্রয়োজন। পাশাপাশি কী ছবি তোলা হয়েছে তা-ও খতিয়ে দেখতে হবে। সরকারি আইনজীবী আদালতকে বলেন যে ইতিমধ্যেই পুলিশ চিনা দূতাবাসকে জানিয়েছে গ্রেফতারের বিষয়ে। ম্যাজিস্ট্রেট ধৃতর সঙ্গে কথা বলেন। আদালতে ওই চিনা যুবক বলেন, "আমি এর আগে ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপিন্সে গিয়েছিলাম। সেখান থেকেই কলকাতায় এসেছি। ওই দেশগুলিতে ড্রোন ব্যবহার করে ছবি তুলেছি। কেউ বাধা দেননি। তাই ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালেও ছবি তুলেছিলাম।" ধৃত চিনা যুবক আদালতে বলেন, "আমাকে কেউ বলেননি যে ড্রোন দিয়ে ছবি তোলা নিষিদ্ধ। আমি ওই নিয়ম জানতাম না। আমি ক্ষমা চাইছি আমার ভুলের জন্য।"

ধৃতের আইনজীবী অভিজিৎ দাসও আদালতকে বলেন,"তাঁর মক্কেলের কোনও অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না। নিয়ম না জেনে নেহাত ভুল করেই তিনি ছবি তোলেন।" ম্যাজিস্ট্রেট আগামী ২৫ মার্চ পর্যন্ত ধৃতের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁরা ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিচ্ছেন, কী ছবি তোলা হয়েছে তা জানতে।