আলু বিক্রির নিয়ে সরকারি নির্দেশের প্রতিবাদে এসইউসিআইয়ের স্মারকলিপি জেলাশাসকে


বর্ধমান: টানা দুই দিন বৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে পড়েছে বর্ধমান জেলার আলু চাষিরা৷ তার আগেই ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্য জুড়ে আলু কেনার নির্দেশিকা জারি করেছিল রাজ্য সরকার৷ এই বিষয়ে মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানে সরকারিভাবে আলু কেনার বিষয়ে বৈঠক হল৷ সরকার যে পরিমাণ আলু কিনবে ও যে দরে কিনবে তা আগেই ঘোষণা করে দিয়েছে৷ কিন্তু এই বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যে সিপিএমের কৃষকসভা ও এসইউসিআই-এর পক্ষ থেকে আন্দোলনে নেমেছে৷

বর্ধমানের কার্জন গেটে রাস্তায় আলু ছড়িয়ে বিক্ষোভ দেখায় এসইউসিআই-এর জেলা কমিটি৷ এই সঙ্গে এদিন তাঁরা সাত দফা দাবি নিয়ে জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন৷ অন্যদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলায় আলু কেনা শুরু করতে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়৷ সেই বৈঠকে হাজির ছিলেন জেলার কৃষি দফতর, কৃষি বিপণন দফতর সহ মহকুমা শাসকরাও৷
 
বৈঠকের শেষে জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার বা শুক্রবার থেকেই সরকারি মূল্যে আলু কেনার কাজ শুরু হবে। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সমস্ত দফতর সহ বিডিও-দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ একজন আলু চাষি সর্বোচ্চ ২৫ কুইন্টাল পর্যন্ত আলু ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারবে৷ সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট চাষিকে বিডিও-র কাছে এই বিষয়ে আবেদন জানাতে হবে৷

তিনি আরও জানান, আবেদন জানানোর পর প্রকৃত আলু চাষি কিনা তা প্রথমে খতিয়ে দেখবেন বিডিও৷ তারপর তিনি জানিয়ে দেবেন সেই চাষিকে কোন হিমঘরে আলু বিক্রি করতে হবে৷ আগামী ১৭ মার্চ পর্যন্ত হিমঘর তার ধারণ ক্ষমতার ১৫ শতাংশ পর্যন্ত আলু কিনতে পারবে৷ প্রাথমিকভাবে তাঁরা মনে করছেন পূর্ব বর্ধমান জেলায় ২০ লক্ষ টন আলু কেনা সম্ভব হবে৷

যদিও আলু চাষিরা জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহ ধরে লাগাতার বৃষ্টি ও কোথাও আবার শিলাবৃষ্টি হয়েছে৷ ফলে আলুর জমি এখন জলের তলায়৷ তারই মাঝে মঙ্গলবার বর্ধমান ও হুগলির সীমান্তবর্তী এলাকায় নতুন করে শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে চাষিমহলে। যেভাবে আলু নষ্ট হয়েছে তাতে বর্তমান সময়ে সরকারি দরে আলু বিক্রির বিষয়টিই হাস্যকর। এখন দরকার চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া। তা নাহলে বহু চাষিই সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসবেন।