মহিলা প্রার্থীর সংখ্যা বাড়ালেন মমতা, তালিকায় রয়েছে চার নতুন মুখ


দলের প্রার্থী তালিকায় মহিলাদের সংখ্যা ৩৫ থেকে বাড়িয়ে ৪১ শতাংশ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত নির্বাচনে বিজয়ী দুই মহিলা সাংসদকে বাদ দিলেও এবার চার নতুন মুখ এনেছেন তিনি। মঙ্গলবার দলের প্রার্থীতালিকা প্রকাশের সময় তিনি বলেন, ''আপনাদের যখন এ কথা বলছি তখন আমার গায়ে কাঁটা দিচ্ছে।'' দেশের অন্য কোথাও কোনও দলের এত সংখ্যক মহিলা প্রার্থী দেওয়ার নজির নেই বলে তৃণমূলের দাবি। মমতা বলেন, ''অনেকে সংরক্ষণের সময় ৩৩ শতাংশের কথা বলেন। আমাদের তা বলতে হয় না।''

রাজনীতি ও প্রশাসনে মহিলাদের উপস্থিতি বাড়াতে বরাবরই সামনের সারিতে থেকেছে তৃণমূল। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর পঞ্চায়েতে ৫০ শতাংশ সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে আইন পাশ করেছেন মমতাই। সেই ধারা বহাল রেখেই এবারের লোকসভা নির্বাচনে মহিলা প্রার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি করেছেন তিনি। এ নিয়ে তাঁর অবস্থান জানিয়ে তৃণমূলনেত্রী হেসে বলেন, ''আমি তো চাই ১০০ শতাংশ হোক।''

এবার অবশ্য দলের মহিলা সাংসদদের পুরনো তালিকায় বড় রকমের রদবদল করতে হয়েছে তৃণমূলকে। মহিলা সাংসদদের কাজের প্রশংসা করলেও এই রদবদলের পিছনে কাজকর্মে অনীহা ও জনসংযোগের অভাবের অভিযোগ রয়েছেও বলে খবর দলীয় সূত্রে। আবার রত্না দে নাগ, কাকলি ঘোষদস্তিদারের মতো সাংসদদের কাজে সন্তুষ্ট তৃণমূল নেতৃত্ব। দেখা গিয়েছে, সারা বছরই তাঁরা দলের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে থেকেছেন। আরও এক দীর্ঘদিনের রাজনীতিক মালা রায় এবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় এসেছেন।

এবারের তালিকায় মহিলাদের জায়গা দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা 'চ্যালেঞ্জ' নিয়েছেন মমতা। নতুন প্রজন্মের দুই অভিনেত্রীকে মনোনয়ন দিলেও তাঁদের কেন্দ্র নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। যাদবপুরের মতো শহুরে কেন্দ্র অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তীকে প্রার্থী হিসাবে বেছে নেওয়ার বিষয়টি দলের অনেকেই ভাবতে পারেননি।  সংসদীয় রাজনীতিতে মমতার যাত্রা শুরু যাদবপুর থেকে। ওজনদার এই কেন্দ্রের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মতো দুঁদে রাজনীতিকের নামও। সেখানে মিমির মতো রাজনীতিতে অনভিজ্ঞকে প্রার্থী করা যথেষ্ট বিস্ময় তৈরি করেছে।

একই ভাবে বসিরহাটের মতো সম্পূর্ণ গ্রামীণ ও রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর কেন্দ্রে নুসরতের মতো শহুরে ঝাঁ চকচকে ও রাজনীতিতে আনকোরা একজনকে প্রার্থী করেছেন মমতা। সাংসদ মুনমুন সেনের কেন্দ্র বদলেও মমতার এই চ্যালেঞ্জের মনোভাবই স্পষ্ট বলে মনে করেন দলের একাধিক নেতা। তাঁদের মতে, ঠিক একইভাবে রাণাঘাটে নিহত দলীয় বিধায়ক সত্যজিত বিশ্বাসের স্ত্রী রুপালিকে সামনে রেখেও মমতা তাঁর স্বভাবসুলভ লড়াইয়ের মেজাজ দেখিয়েছেন বলে পর্যবেক্ষকেরা মনে করেন।