‌আধার কার্ড পেয়ে গর্বিত,বললেন আফজল গুরুর ছেলে


নামের আগেই পৌঁছে যায় তাঁর পরিচয়। সে পরিচয় খুব একটা সুখের নয় গালিবের কাছে। বিশেষ করে বাবার নাম যখন কেউ জানতে চায় তখন আরও কঠিন হয় পরিস্থিতি। গালিব সংসদ হামলা মূল চক্রী আফজল গুরুর ছেলে। আফজলের ফাঁসি দিয়েছে ভারত সরকার। তারপর থেকে তাঁর পরিবারের জীবন যে কতটা দুর্বিসহ হয়ে উঠেছিল সেটা তাঁরাই ভাল করে বলতে পারবেন। সেই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে থেকেও আফজল গুরুর ছেলের পরিচয় নিয়ে গালিব একের পর এক পরীক্ষায় ভাল নম্বর করে পাস করেছে। তাই নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে খবরও হয়েছে। উপত্যকার বাসিন্দাদের কাছে গালিব একজন নজির বলা চলে। পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে ফিদায়েঁ জঙ্গি হামলা চালিয়েছিল সেই  আদিল আহমেদ দারও কিন্তু উপত্যকারই বাসিন্দা। হামলার পর ছেলের পক্ষ নিয়েই আদিলের মা–বাবা বলেছিলেন, সেনাবাহিনীর অত্যাচারের কারণেই তাঁদের ছেলে জঙ্গি হয়ে গিয়েছিল। সেটাই যদি সত্যি হয় তাহলে গালিব কেন জঙ্গি হল না। কারণ আমৃত্যু তাঁকে তাড়া করে বেড়াবে একটাই নাম আফজল গুরু। সেই গালিব গত ১৪ ফেব্রুয়ারি আধার কার্ড হাতে পেয়েছে। ঘটনাচক্রে সেদিনই উপত্যকার আরেক সন্তান ফিদায়েঁ জঙ্গি হয়ে আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে।

১৮ বছরের গালিব সদ্য প্রাপ্ত বয়স্ক হয়েছে। এবছরের নতুন ভোটার। বরফঢাকা উপত্যকারা প্রত্যন্ত এলাকা গুলশনাবাদে নিজের ঘরে বসে আধার কার্ড হাতে নিয়ে নিজের আনন্দ আর ধরে রাখতে পারেনি। আধার কার্ড হাতে নিয়ে গালিব বলেছে,'‌আমার কাছে অন্তত একটা পরিচয় পত্র আছে। যেটা আমি সকলকে দেখাতে পারি।'‌ এবার পাসপোর্ট হাতে পেতে চায়ে গালিব। কারণ তার স্বপ্ন বিদেশের কোনও ভাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পড়াশোনা করা। গালিব জানিয়েছেন, '‌যেদিন আমি পাসপোর্ট হাতে পাব সেদিন আমি একজন ভারতীয় হিসেবে সেটা হবে আমার গর্বের দিন'‌।
মা আর দাদুর সঙ্গে মামাবাড়িতেই থাকে গালিব। মে মাসের পাঁচ তারিখ মেডিকেল প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কোনও কারণে যদি সেই পরীক্ষায় সুযোগ না পায় তাহলে, বিদেশে গিয়ে পড়াশোনা করতে চায় যে। তুরস্কের একটি কলেজ নাকি তাকে স্কলারশিপ দেবে বলে চিঠি পাঠিয়েছে। যেকোনও মূল্যে ডাক্তারি পড়তে চায় গালিব। কারণ সে জানে আফজলগুরুর ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন ছিল।